শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

০৫) সৌমিত্র সেনগুপ্ত

সিম্ফনী
সৌমিত্র সেনগুপ্ত



দীর্ঘশ্বাস প্রথমে, ঋণমুক্তির। তারপর অবসাদ। টয়লেটে ঢোকার পর সব মিলিয়ে সময় লেগেছে পঞ্চান্ন মিনিট। ভাগ করলে বাহান্ন মিনিট প্লাস তিন। বাইশ বছরের অনভ্যাস, নইলে হয়তো ওই শেষের তিন কমে আড়াই অথবা দুই হতে পারতো। অ্যা ফ্রী বী নাউ, বাইশ বছর পরে আমি মুক্ত। এবার ওদের সাথে গ্রুপ সাইট সিইং-এ যেতে পারি সেন্ট স্টিফেন চার্চের দিকে।

সিম্ফনী, ডায়নিং হলে ঢোকার মুহূর্তে ব্রেকফাস্ট টেবিলে চোখ পড়েছিল ওর দিকে। গলায় জড়ানো স্কার্ফটাও পরিচিত। পাশের ছেলেটি হয়তো পনেরো। টেবিলের উল্টোদিকের মেয়েটির কি সামান্য বেশি? কমও হতে পারে। মেয়েটির পাশের চেয়ারে বসা ভদ্রলোকের চেহারাটা না দেখলেও পরিচিতি অনুমেয়।

চার্চের পশ্চিম দেওয়ালের ছবিটি লিওনার্দো দ্য ভিন্সি’র ‘দ্য লাস্ট সাপার’এর প্রতিকৃতি। নির্মাণ শুরু হয়েছিলো ১৮২৯এ। দ্বারোদঘাটন করেছিলেন তৎকালীন কলকাতার বিশপ ১৮৩০এর শেষ দিকে। জানালার ঘষা কাচে দেখলাম ‘ক্রুশিফিকেশন অফ জেসাস’এর ছবি। চার্চের ঘণ্টাটাও অদ্ভুত, দড়ি বাঁধা চারটে হাতুড়ি ঝুলে আছে উল্টো করে বসানো ইংরেজি ‘V’এর মতো কাঠের স্ট্রাকচার থেকে ঘণ্টাটাকে ঘিরে। ঘণ্টাঘর থেকে ওই দড়ি টানলে সুন্দর সুরে বেজে ওঠে ঘণ্টা। সেলাম আর্কিটেক্ট সাহেব, এত বছরে একটুও নষ্ট হয়নি তোমার কারুকাজ।

“উই শ্যাল বি ব্যাক টু দ্য হোটেল নাউ ফর লাঞ্চ অ্যান্ড শ্যাল টেক অ্যা ব্রেক দেয়ার ফর ফরটি ফাইভ মিনিট। আফটার লাঞ্চ উই শ্যাল মেক অ্যা ট্রিপ টু দ্য ফেমাস লেক অ্যাট উটি...”।

হোটেল কাউন্টারে রুমের চাবির সাথে হাতে এসেছিলো একটা চিরকুট... “চিনেছি – সিম্ফনী”। মুক্তি... নিজের দিকে ফিরে হাসলাম একটু। অবসাদ তারপর।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন