বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৪

১১) দেবযানী বসু

আবার ব্ল্যাক আউট



উৎসমুখ ঐ আনন্দবাজারের বিজ্ঞাপনটি। বাঙাল ভাষার প্রতি এক অদ্ভুত প্রীতি মিলিয়ে দিল ভারতীদিকে মিঃ মিত্র মিসেস মিত্র আর তাদের নার্সারি যাওয়া বাচ্চাটির পরিবারে। ঘন ঘন ঋতু পরিবর্তনের মতো কাজের লোকও যাওয়া আসা করে নানা কারণে। বাচ্চা হওয়া ইস্তক ঝামেলা লেগেই আছে। একেক জনের নিয়োগ ও বিয়োগের মধ্যে একেকটি উপনিষদ তৈরি হয়।

অফিসকর্মনিপুণা মিসেস মিত্র পাথরপ্রতিমার বিধবা মহিলার উপর প্রায় একবছর হলো সংসার ও বাচ্চার ভার ন্যস্ত করেছেন। নাঃ, রুম ফ্রেশ্নার দিয়ে আবহাওয়া পবিত্র করার চেষ্টা মিঃ মিত্রর মধ্যে নেই।

লো প্রেশারের কারণে ব্ল্যাক আউট খাওয়া মিসেস মিত্র দুপুরবেলায় হঠাৎ ছুটি পেয়ে গেলেন, প্রচুর উপদেশ আদেশ ও একঝাঁক কলকলানো সহকর্মী ও কর্মিণীদের আন্তরিকতা সহ। মিঠি ঘুমোচ্ছে নিশ্চয়ই স্কুল থেকে ফিরে। মিঠির মনটা রাইজোমেটিক হয়ে গেছে জন্ম থেকে এই আয়া পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায়। আর ভারতীদিকে সর্দিকাশি হলে রুমাল এবং মাসিক হলে মেয়েলি প্যাকেটগুলি ব্যবহার করতে শেখানো হয়ন। ইদানীং সে ঘোমটামুক্ত ও দোকানবাজার সামলায়।

বাড়ির সিঁড়িতে পা রাখেন মিসেস মিত্র। সামনের ঘেরা বারান্দায় মিঠি খেলছে। ওর তুলোপুতুল আর ট্রাইসাইকেল... খুব নিমগ্ন... সাড়া পেয়ে চাবি এগিয়ে দেয় আর অবাক হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। ঘুমোয়নি কেন জানতে চাওয়ায় বলে যে, মাসির ভাই এসেছে। চকিতে অচেনা পুরুষচটি চোখে পড়ে। অসম্ভব দ্রুততায় কোণের বেডরুমের বন্ধ দরজায় ধাক্কা মারেন। আর দরজা খুলে গেলে লক্ষ লক্ষ নার্ভের জ্বলে ওঠা আলোয় তিনি আদিম অথচ আধুনিক কোনো মানবগুহায় ঢুকে পড়েন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন