সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩

২১) সুমিতরঞ্জন দাস

অনামিকা / ১

আরও একটা দিন শেষ হয়ে গেল
ধুমায়িত সময়ের বিছানায়
                                   তুমি আরও ঘুমোও
কস্তুরিগন্ধা নধর স্মৃতিগুলো ফিরে আসুক স্বপ্নে;

মেঘবালিকা হয়ে আসুক
তোমার অবিন্যস্ত চুলের উদাসীনতায়,
সূর্যডাকা ভোরে পাখপাখালি গেয়ে যাক
                                              মানবিক সম্পর্কের
                                              বাঁধাধরা জয়গান,
সৃষ্টির রহস্যে ধাঁধা লাগুক মনোজগতের তান,
                                              চলো ভেসে যাই
যাপিত জীবনের গার্হস্থ্য ভেলায়;

চেয়ে দেখো
রাতের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকা বিচ্ছিন্নতা
সব কুড়িয়ে নেয় দেহবিক্রেতা
                                       হেসে ওঠে মজুরী শ্রমিক
অক্ষমতা ঢেলে দেয় প্রিয়তমার ক্রোড়ে,
ক্ষণজীবী হয়ে বেঁচে থাক
                                 তোমার আমার মানুষের ভিড়ে;

ঘুমোও তুমি অনামিকা
পরজীবিরা জেনে যাক ভেঙে পড়া জীবনের অসুস্থতা।



অনামিকা / ২

জাগো তুমি
দেখো আজ রাতে
রংমাখা মানুষেরা সব এক হয়ে যাবে,

কষ্টের স্মৃতিবিষ ঝেড়ে ফেলে
চশমায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টি মুছে
যাপিত জীবনের লুডো ভুলে
যৌবন গলিপথে ছুটে বেড়াবে;

বৃহন্নলা তখন জমির আলপথে
এলোকেশী মুখে রামধনু ঝিলিক
কাজলাদীঘি আঁখিতে শস্যক্ষেত আর
                             কিছু ছেঁড়াখোঁড়া পান্ডুলিপি...

অনামিকা,
মৃতবৎসা পৃথিবীর ক্যানভাসে
ভ্রুণসার শিশুর মায়ের স্বপ্ন ফুটিয়ে তুলতে
আমিও যাযাবর হলাম,
                             ঘুম ভাঙাতে পারলাম না।



অনামিকা / ৩

জানি অনামিকা, জানি
এখনো জ্বলে ওঠে সুপ্ত যৌবনস্মৃতি;

সমালোচনায় ঝড় উঠলে
বন্ধ করে দিও মনের জানালা,
নোংরা হলে না হয়
                     চোখের জলেই ধুয়ে নিও বর্ণমালা।

আজ বরং রেখে যাও
তোমার কাজলাদিঘি আঁখি
ফেলে আসো স্নানঘাটে অন্তরবসন
কিংবা সাজের সময় --
                    আয়নায় সেঁটে রাখা টিপখানি, আলগোছে।

অনামিকা,
বরং চলে যাওয়ার আগে
ভ্রমর চোখের কাজল মায়া
গুনগুনিয়ে যেও
আমার কাছে
আমার গোপন আলোর
                    নিষিদ্ধ বর্ণমালার ক্যানভাসে...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন