রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৩

২৮ ঊষসী ভট্টাচার্য

তিনটি কবিতা
ঊষসী ভট্টাচার্য

এলোমেলো…

চাহিদার ঢেউয়ে ভাঙো না আর
নদীর দু’পার
থেকে থেকে আলগা হয়ে গেছে বালি-
শুকিয়ে উঠেছে বুকের চর
কেমন যেন নিম্নগামী ধারা,
জোর খাটানোর বিক্ষোভই নেই, নীতা?
হিজিবিজি বিস্তর ভরালে ঠোঁট,
আগুন দিয়ে যাও...
অপেক্ষার বারুদ তলানিতে আজ,
জল দিয়ে নরম কোরো না মাটি,
শুকনো বুকের উঠোন
আগুনই, বড্ড প্রয়োজন।

বিকেলে আজ সমুদ্র হবে?
ঘুরে আসব বালিয়াড়ি,
নোনা ঢেউ আসেনি-
শরীরে বহুদিন।
আমার শরীর,
তোমার ঠোঁট পাহাড়ের ঋণ।

এখানে গর্ত, ওখানে গর্ত
নীলাচল বড্ড ডাকছে নীতা...
পাহাড় জমাট পাহাড় জমাট শুধু।
তুমিই আমার খরস্রোতা।



সেল...

বিস্তর ধুলো জমেছে রুদ্র,
‘আসি’ বলে ফের আরেকটা স্বপ্ন
ভো কাট্টা করল গলির কোণ!
উত্তর কলকাতার প্রাচীন নাগরিক
বস্তি জুড়ে
আরেকটা নিতান্ত বজ্রপাত
পাশাপাশি বিছানায় আর হাঁটা যায় না,
সাপ লুডোর খেলা অনেক তো হলো
এবার পুলিশের ঘুষে ভালোবাসা
কিংবা বৃদ্ধ নপুংসকের কন্ডোম বাঁধা খেলা।
দেখে আসব এ জন অরণ্য ঘুরে
ভাঙনের আওয়াজ কত তীব্র কাচের গ্লাসের চেয়েও।
উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও কী মারাত্মক
শপিংমলে এবার বিকোবো তুমি আমিও।
একটার পর আরেকটা চামড়া চামড়ায় বদলে যাবে সেতু,
ভেবো না রুদ্র,
এক্সচেন্জ অফার ও ডিস্কাউন্ট সেল বহাল থাকছে আবারও।



দেওয়াল

নিঃশ্বাসের শব্দ এঘর থেকে ওঘরে।
সকালের ব্রাশে জীবনের চুইংগাম আটকে;
আঠালো আকর্ষণ,
চশমা হারিয়েছি সম্প্রতি-
দৃষ্টি নেহাত ঝাপসা ঝাপসা।
এক প্রেয়সীর প্রেমিক আকাশ খুলেছে তার হাতের মুঠোয়,
চিঠিতে লিখেছে-
‘ডানা মেলে ওড়ো’....
এখন, আকাশ বলতে বেনামী প্রচ্ছদ
দৃশ্যত জলের পড়ন্ত ছায়া-
ডুবে থাকা আর ভেসে যাওয়া স্রোতে তাই
একে অন্যের নামান্তর।
এক কবিকে প্রত্যুত্তরে বলেছি,
‘হাঁটতে শিখেছি, চলতে পারি না
ঝুঁকতে শিখেছি, উঠতে পারি না’

পাশের বাড়ির ছেলেটি উঠেছে ফাইভে,
রাতের পণ্য মেয়েটির থেঁতলে যাওয়া রঙমাখা শরীর
ক্লান্ত রাত কাটিয়ে উঠেছে সকালে।
আমার ওঠা অগ্নি সহবাস সংযোগে...
জরায়ুর গতি থেমে থেকেছে
রোজের মাতলামো আবদ্ধে।

প্রেমিককে তার প্রেয়সী লিখেছে চিঠিতে-
‘আমায় নিয়ে ভেবো না
অস্ত উদয় নিয়েই জীবন
সূর্যের আলোটুকু নাও
দহন হাতড়াতে গেলে,
পুড়ে ছাই হবে একেবারে...
আমায় নিয়ে ভেবো না
দাবানল নিয়েই বাঁচো’।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন