ভ্লাদিমির নবকুমার
অর্ক চট্টোপাধ্যায়
ভ্লাদিমির নবকুমার, যাকে কেউ কেউ ললিত বলেও ডাকতো। আমি অবিশ্যি কোনোদিনই তাকে ওই নামে ডাকিনি! গবেষণার কাজে আমি দেশ ছাড়লুম আর প্রায় একই সময়ে নবকুমার ব্যাঙ্কে চাকরি পেল। পৃথিবীর দুই প্রান্তে দু’জন দু’ভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়লুম আর পৃথিবীর জগঝম্প চলতে লাগলো। নবকুমার অনেক আগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল ব্যপারটা। কত ঝটপট সব পেঁচিয়ে উঠছে, পাল্টে যাচ্ছে ঘূর্ণিবলে! দিনে একশোটা ছবি, খান দশেক কোট, ইউটিউব থেকে গানের লিঙ্ক, গেমস আরো কত কী! Make it happen! না হলে জাস্ট পারবে না, এই আর কি! সব পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু কিছুই ঠিক বদলাচ্ছে না, এমন ভজকট কেস একটা!
নবকুমারের সাথে ফোনে কথা হতো মাঝে মধ্যে। কলকাতা আর সিডনির ঘন্টা ৬য়েকের তফাতেও কত কী যে পাল্টে যাচ্ছিল, তার কোনো ইয়ত্তা ছিল না। সিডনি আসার পর প্রথম যেদিন নবা ফোন করে তখন আমি স্নানে যাবার তোড়জোড় করছিলাম। গত ঘন্টাখানেক ধরেই যাব যাব করছি, কিন্তু যাওয়া হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল টেলিভিশনে মহাত্মা গান্ধীর জীবন নিয়ে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে, আর আমি কাঁধে তোয়ালে চাপিয়ে সোফায় বসে দেখে যাচ্ছি; শেষ হলে স্নান করতে যাব। অনুষ্ঠানটা পরিচালনা করছে যে মেয়েটি, তার মা অস্ট্রেলিয়ান আর বাবা ভারতীয়। গান্ধীর খোঁজে সে তার আধা-মুলুকে ফিরে যাবার একটা সুযোগ পেয়েছে। আর আমার মতো লোক যার মগজে কিম্বা হৃদয়ে দেশাত্মবোধের ছিঁটেফোঁটাও নেই, সে কিনা হাঁ করে গিলছে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পৌঁছে দেওয়া চরম সেন্টুময় ওরিয়েন্টালিস্ট এই ডকু-পিক! দেশ ছাড়লে কিরকম যেন পেয়ে বসে দেশটা! মামার বাড়ির মতো। কেমন যেন 'Make it happen! না হলে জাস্ট পারবে না টাইপের কেস।
টাইটেল কার্ডের সাথে সাথে প্যান্টুল খুলে তোয়ালেটা কৌপিন স্টাইলে চাগিয়ে নিলাম। একা বাড়িতে রোজই স্বাধীনতা দিবস। আর ঠিক তখনই নবকুমারের ফোন। ফোনে খানিকক্ষণ জগঝম্প নিয়ে কথা হলো। নবা বললো, আমাকে নিয়ে নাকি একখানা গল্প লিখছে। পুচকে আড্ডার পর চনমনে মনে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আয়নায় নিজেকে দেখে বেশ মজা লাগলো। জাস্ট একটা লাঠি দরকার।
তারপর একদিন মধ্যরাতে নবকুমার হঠাৎ ফোন করলো। মাল খেয়ে আউট। শুধু বললো ‘ওহ, তোর গলাটা দেখছি একই আছে, পাল্টায়নি!’ আমি আর কিছু বললাম না। ও ফোনটা রেখে দিল। আমরা দুজন পৃথিবীর দুই প্রান্তে আবার দু’রকম ভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, আর জগঝম্প চলতেই থাকলো। তারই মধ্যে ও আমায় নিয়ে আর আমি ওকে নিয়ে ফেঁদে ফেললাম দুটো গল্প। আমার গল্পে আমি ছিলাম না, আর ওর গল্পে ও!
অর্ক চট্টোপাধ্যায়
ভ্লাদিমির নবকুমার, যাকে কেউ কেউ ললিত বলেও ডাকতো। আমি অবিশ্যি কোনোদিনই তাকে ওই নামে ডাকিনি! গবেষণার কাজে আমি দেশ ছাড়লুম আর প্রায় একই সময়ে নবকুমার ব্যাঙ্কে চাকরি পেল। পৃথিবীর দুই প্রান্তে দু’জন দু’ভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়লুম আর পৃথিবীর জগঝম্প চলতে লাগলো। নবকুমার অনেক আগেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল ব্যপারটা। কত ঝটপট সব পেঁচিয়ে উঠছে, পাল্টে যাচ্ছে ঘূর্ণিবলে! দিনে একশোটা ছবি, খান দশেক কোট, ইউটিউব থেকে গানের লিঙ্ক, গেমস আরো কত কী! Make it happen! না হলে জাস্ট পারবে না, এই আর কি! সব পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু কিছুই ঠিক বদলাচ্ছে না, এমন ভজকট কেস একটা!
নবকুমারের সাথে ফোনে কথা হতো মাঝে মধ্যে। কলকাতা আর সিডনির ঘন্টা ৬য়েকের তফাতেও কত কী যে পাল্টে যাচ্ছিল, তার কোনো ইয়ত্তা ছিল না। সিডনি আসার পর প্রথম যেদিন নবা ফোন করে তখন আমি স্নানে যাবার তোড়জোড় করছিলাম। গত ঘন্টাখানেক ধরেই যাব যাব করছি, কিন্তু যাওয়া হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল টেলিভিশনে মহাত্মা গান্ধীর জীবন নিয়ে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে, আর আমি কাঁধে তোয়ালে চাপিয়ে সোফায় বসে দেখে যাচ্ছি; শেষ হলে স্নান করতে যাব। অনুষ্ঠানটা পরিচালনা করছে যে মেয়েটি, তার মা অস্ট্রেলিয়ান আর বাবা ভারতীয়। গান্ধীর খোঁজে সে তার আধা-মুলুকে ফিরে যাবার একটা সুযোগ পেয়েছে। আর আমার মতো লোক যার মগজে কিম্বা হৃদয়ে দেশাত্মবোধের ছিঁটেফোঁটাও নেই, সে কিনা হাঁ করে গিলছে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পৌঁছে দেওয়া চরম সেন্টুময় ওরিয়েন্টালিস্ট এই ডকু-পিক! দেশ ছাড়লে কিরকম যেন পেয়ে বসে দেশটা! মামার বাড়ির মতো। কেমন যেন 'Make it happen! না হলে জাস্ট পারবে না টাইপের কেস।
টাইটেল কার্ডের সাথে সাথে প্যান্টুল খুলে তোয়ালেটা কৌপিন স্টাইলে চাগিয়ে নিলাম। একা বাড়িতে রোজই স্বাধীনতা দিবস। আর ঠিক তখনই নবকুমারের ফোন। ফোনে খানিকক্ষণ জগঝম্প নিয়ে কথা হলো। নবা বললো, আমাকে নিয়ে নাকি একখানা গল্প লিখছে। পুচকে আড্ডার পর চনমনে মনে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আয়নায় নিজেকে দেখে বেশ মজা লাগলো। জাস্ট একটা লাঠি দরকার।
তারপর একদিন মধ্যরাতে নবকুমার হঠাৎ ফোন করলো। মাল খেয়ে আউট। শুধু বললো ‘ওহ, তোর গলাটা দেখছি একই আছে, পাল্টায়নি!’ আমি আর কিছু বললাম না। ও ফোনটা রেখে দিল। আমরা দুজন পৃথিবীর দুই প্রান্তে আবার দু’রকম ভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম, আর জগঝম্প চলতেই থাকলো। তারই মধ্যে ও আমায় নিয়ে আর আমি ওকে নিয়ে ফেঁদে ফেললাম দুটো গল্প। আমার গল্পে আমি ছিলাম না, আর ওর গল্পে ও!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন