বাড়ি ফিরে
অচিন্ত্য দাশ
বসাক ট্যুরিজিম্-এর ‘হিমালয় যাত্রা’ প্যাকেজটা বেশ ছিল। দিল্লী-হরিদ্বার থেকে আলমোড়া-নৈনিতাল হয়ে নেপাল-ভূটান-সিকিম – তিন মাসের টানা ভ্রমণ। হিমালয়ের এদিক থেকে ওদিক। খরচা একটু বেশির দিকে, কিন্তু এই সত্তর বছর বয়সে এছাড়া উপায় কী! হাওড়া স্টেশনে প্রি-পেড লাইন থেকে ট্যাক্সি নিয়ে এই বাড়ি ফিরলেন। যা: বাবা... এই না হলে কলকাতা! বাড়িঘর অন্ধকার, ইলেক্ট্রিক গেছে...
চাকা লাগানো স্যুটকেসটা টেনে দরজার কাছে আনতেই শুনতে পেলেন ছোট নাতির গলা... দাদু এসে গেছে... দাদু আমাকে আগে ফটো দেখাবে। বড় নাতি শুনতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠল... না দাদু, না... আমাকে আগে। নাতনি ওপাশ থেকে বলল... চুপ কর তোরা, দাদু আগে সবাইকে পাহাড়ের গল্প বলবে। সিঁড়িতে কার একটা পায়ের শব্দ শুনে তিনি বললেন... ওরে তোরা কেউ নামিস নে... অন্ধকারে আছাড় খাবি, আমি আস্তে আস্তে উঠছি। গিন্নীর গলা শোনা গেল রান্নাঘর থেকে... এই সুবু, তাড়াতাড়ি আয় রে, লুচিগুলো হাতে হাতে বেলে দে। তোর বাবা এসে গেছে। সুবু সাড়া দিলো... যাচ্ছি মা, তুমি কড়াইটা চাপাও।
নিচের ঘরের চাবি তাঁর কাছে থাকে – তিনি দরজায় চাবির ফোকর খুঁজে ঘর খুলে ভেতরে ঢুকলেন। টর্চ-র্ফচ তো এখন খুজে পাওয়া যাবে না। সে চেষ্টা না করে অন্ধকারের মধ্যেই ব্যাগ-বাক্স এক পাশে রেখে দিলেন।
সদর দরজাটা বন্ধ করতে যাবেন, এমন সময় আলো এসে গেল।
আলো এসে যেতেই সব ফাঁকা, সব শুনশান। বাড়িতে কেউ নেই। থাকবার কথাও নয়। তিন বছর আগে গিন্নী স্বর্গবাসী হলেন – তারপর থেকে মেয়ে-জামাই-নাতি-নাতনি কমই আসে। বাড়িতে এখন তিনি একাই থাকেন। অনেক বছর আগের চুনকাম করা দেওয়ালে বাঁকা হয়ে ঝুলছে ক্যালেন্ডার, ঘড়ির ব্যাটারি শেষ, বারোটা দশ হয়ে কবে বন্ধ হয়ে গেছে! নিচের তলার এই ঘরটায় আসবাবপত্র তেমন নেই, একটা পুরনো ড্রেসিং টেবিল আর একটা চৌকি। আয়নায় নিজের ছবিটা নিজের কাছেই কেমন বেখাপ্পা লাগছে যেন!
লোড-শেডিং এর অন্ধকারটা কিন্তু বেশ ছিল, বাড়ি ফেরার মায়া কেমন আদর করে জড়িয়ে রেখেছিল মানুষটাকে
বসাক ট্যুরিজিম্-এর ‘হিমালয় যাত্রা’ প্যাকেজটা বেশ ছিল। দিল্লী-হরিদ্বার থেকে আলমোড়া-নৈনিতাল হয়ে নেপাল-ভূটান-সিকিম – তিন মাসের টানা ভ্রমণ। হিমালয়ের এদিক থেকে ওদিক। খরচা একটু বেশির দিকে, কিন্তু এই সত্তর বছর বয়সে এছাড়া উপায় কী! হাওড়া স্টেশনে প্রি-পেড লাইন থেকে ট্যাক্সি নিয়ে এই বাড়ি ফিরলেন। যা: বাবা... এই না হলে কলকাতা! বাড়িঘর অন্ধকার, ইলেক্ট্রিক গেছে...
চাকা লাগানো স্যুটকেসটা টেনে দরজার কাছে আনতেই শুনতে পেলেন ছোট নাতির গলা... দাদু এসে গেছে... দাদু আমাকে আগে ফটো দেখাবে। বড় নাতি শুনতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠল... না দাদু, না... আমাকে আগে। নাতনি ওপাশ থেকে বলল... চুপ কর তোরা, দাদু আগে সবাইকে পাহাড়ের গল্প বলবে। সিঁড়িতে কার একটা পায়ের শব্দ শুনে তিনি বললেন... ওরে তোরা কেউ নামিস নে... অন্ধকারে আছাড় খাবি, আমি আস্তে আস্তে উঠছি। গিন্নীর গলা শোনা গেল রান্নাঘর থেকে... এই সুবু, তাড়াতাড়ি আয় রে, লুচিগুলো হাতে হাতে বেলে দে। তোর বাবা এসে গেছে। সুবু সাড়া দিলো... যাচ্ছি মা, তুমি কড়াইটা চাপাও।
নিচের ঘরের চাবি তাঁর কাছে থাকে – তিনি দরজায় চাবির ফোকর খুঁজে ঘর খুলে ভেতরে ঢুকলেন। টর্চ-র্ফচ তো এখন খুজে পাওয়া যাবে না। সে চেষ্টা না করে অন্ধকারের মধ্যেই ব্যাগ-বাক্স এক পাশে রেখে দিলেন।
সদর দরজাটা বন্ধ করতে যাবেন, এমন সময় আলো এসে গেল।
আলো এসে যেতেই সব ফাঁকা, সব শুনশান। বাড়িতে কেউ নেই। থাকবার কথাও নয়। তিন বছর আগে গিন্নী স্বর্গবাসী হলেন – তারপর থেকে মেয়ে-জামাই-নাতি-নাতনি কমই আসে। বাড়িতে এখন তিনি একাই থাকেন। অনেক বছর আগের চুনকাম করা দেওয়ালে বাঁকা হয়ে ঝুলছে ক্যালেন্ডার, ঘড়ির ব্যাটারি শেষ, বারোটা দশ হয়ে কবে বন্ধ হয়ে গেছে! নিচের তলার এই ঘরটায় আসবাবপত্র তেমন নেই, একটা পুরনো ড্রেসিং টেবিল আর একটা চৌকি। আয়নায় নিজের ছবিটা নিজের কাছেই কেমন বেখাপ্পা লাগছে যেন!
লোড-শেডিং এর অন্ধকারটা কিন্তু বেশ ছিল, বাড়ি ফেরার মায়া কেমন আদর করে জড়িয়ে রেখেছিল মানুষটাকে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন