বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৩

০১ বারীন ঘোষাল

একদিন অ্যালবামেবারীন ঘোষাল



পুরনো মেকানিক্যাল আগফা ক্যামেরাটা পড়েই আছে। আগেকার তোলা ছবিগুলো। এখন সবার ডিজিটাল। বাবলুরও তাই। সে যখন কণিকা আর টিঙ্কুকে নিয়ে বেড়িয়ে ফিরে আসে, আবু পাহাড় বা জয়সলমীর বা মন্দারমনি থেকে, অ্যালবামে রাখার মতো কিছুই থাকে না সঙ্গে। কী যে ওইটুকু ক্যামেরাতে দেখায়, হাতে ধরা যায় না, মন মানে না। কখনো বাবলুর দয়া হলে কম্পুটারে। ওই, ছোঁয়া যায় না। মন ভরে? অ্যালবামে হাত বোলাতে বোলাতে স্মৃতিতে ডুবে থাকতে কী ভালো লাগে! বাবলুরা বুঝবে না।


যত্ন করে অ্যালবামটায় সাবধানে ফুঁ দিয়ে তাকে তুলে রাখতে গিয়েও তুলল না আনন্দ। কোলে নিয়ে বসে রইল কিছুক্ষণ। মাঝখানটা খুলে ধরল। বউয়ের বিয়ের পরের ছবি। সদ্য শ্বশুরবাড়ি এসেছে আধো পায়ে। আনন্দ ছবিটা তুলেছিল। তাতে মিচকি হাসছে সানন্দা। লোকে আনন্দ বলে ডাকলেই সে চমকে উঠতো। কী সুন্দর ছিল সানন্দা। কখন যেন বাবলুর মা হয়ে গেল। দূরে সরে গেল। আর তেমন করে কাছে আসতো না। ছবির গায়ে হাত বোলাচ্ছিল আনন্দ, হঠাৎ টিঙ্কু এসে এক টান দিল। আনন্দ হাঁ হাঁ করে উঠল –- দ্যাখ দ্যাখ, করে কী, এই টিঙ্কু, টিঙ্কাই, ছাড়, ছাড় বলছি, মারব কিন্তু ----


খিল খিল করে হাসতে হাসতে টিঙ্কু জোরে টানতে আধখানা খুলে বেরিয়ে গেল। টিঙ্কু দৌড় দিল আধখানা নিয়ে চিঠি বিলি করতে করতে। পেছন পেছন আনন্দ ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে গোঁগাতে থাকল –- আঁ আঁ আঁ আনুনাসিক স্বরে ----


প্রচন্ড ঝাঁকুনি লাগাতে আনন্দ চোখ চেয়ে দ্যাখে সে আরামচেয়ারে শুয়ে, আর বাবলু ঝাঁকুনি দিচ্ছে তাকে –- বাবা, বাবা –-


 

২টি মন্তব্য:

  1. স্বপন যদি মধুর এমন...।
    -প্রশান্ত গুহমজুমদার

    উত্তরমুছুন
  2. সে সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

    -প্রশান্ত গুহমজুমদার

    উত্তরমুছুন