স্বপন দেখিনু
মুখে কষ্ট মেখে হাত কাটা স্বপনের দোকানে চা টোস্ট-এর অর্ডার দিয়ে বসে দেখছি কী করে সে এক হাতে চা বানিয়ে ঢাললো, পাউরুটি সেঁকলো, তারপর একে একে টেবিলে রাখলো। আর আমার দুটো হাত, তবু যেন আমিই নুলো। স্বপন বললো –
-- কী ব্রাদার, মুখটা যেন পেছনে কাটি করেছে কেউ?
-- আর বোল না, আমার স্বপ্না বাড়িউলি...
-- হ্যাঁ হ্যাঁ বলো, রগড়টা বলো, বাড়িউলি স্বপ্নার সঙ্গে ফস্টিনস্টি বুঝি?
-- না গো। স্বপ্না আমাকে প্যাঁদাতে বাকি রেখেছে। আমাকে তুলবেই। হপ্তার মধ্যে যদি না উঠি তাহলে শ্মশান স্বপনকে লেলিয়ে দেবে। আচ্ছা তুমিই বোঝ স্বপনদা, শ্মশান স্বপন এলে আমি কোথায় যাই?
-- ভাবতে হচ্ছে। তুমিইইই –- কাঁধে চেপে শ্মশানে চলে যাবে। আরে হ্যাঁ, তুমি ছড়া স্বপনের কাছে চলে যাও। ও এমন ছড়ানো ঝাড়বে না, ভূতেও পালাবে। সেই সেবার...
অগত্যা ছড়া স্বপনকে –- একটা কিছু উপায় করো ভাই, আমাকে রক্ষে করো। কেসটা শুনে স্বপন বললো –- সিরিয়াস। এইজন্যই তো কবি ছীবানন্দ সুসাইড করেচিল। তবে ভয় নেই। আমার কাচে এয়েচো, কিছু একটা হয়ে যাবে। এমন লিখে দুবো না, যে কানে গেলেই লজ্জা দেবে। কিছু মাল ছাড়ো দিকি। হাজার পাঁচেক। ভেবোনি, শ্মশান স্বপন এলে এর ডবল নেবে খন।
-- এখন তো নেই ভাই।
-- তবে আর কী। কাল এসো বাড়িতে। মাল্লু দেবে, কবতে নেবে। ঠিক আচে?
আমার কাঁপুনি আর কমে না। ঝুলে রইলো এখনো। বাড়ি ফিরতে পা সরছে না। কী করে সেই খান্ডারনীকে চুপ করানো যায়, তা ভাবতে ভাবতে মনে পড়লো পাশের বস্তির শান্তির কথা। ভাড়াটে চোপদার, মানে, চোপার লড়াইয়ে ক্ষেপ নেয়, ভাড়া খাটে। দেখি যদি কমে কোনো উপায় হয়! শান্তির ঘরের দরজায় পৌঁছে দেখি কাঁপুনি কিছুতেই থামছে না। মানুষের কত বন্ধু থাকে এসময়ে মনোবল বাড়াবার জন্য। আমার ভাগ্যে না বউ না বন্ধু। এমন কী পাড়ার ক্লাবও স্বপ্নার দলে। দরজার কড়ায় হাত রাখা মাত্র সেটা নিজে থেকেই বাজতে থাকলো।
-- কে রে? মেয়েমানুষের গলা এত বাঁজখাই হতে পারে ভাবা যায় না। আমার পিলে চমকে গেল। দরজা খুলে এসে দাঁড়ালেন মূর্তিমতী।
-- কেএএএ? ওমা! পাড়ায় থাকি, ভাজা মাছটি উলটে খেতে দেখিনি তো! তোমাকে তো কখনো রা কাড়তে দেখিনি গা!। তা আজ কী মনে করে বাছা?
-- আমাকে বাঁচান দিদি। বাড়িউলি বাওয়াল করছে উঠে যাবার জন্য। শ্মশান স্বপন দেখাচ্ছে। মোটে এক হপ্তা টাইম। আমাকে বাঁচান!
-- তো উঠে যাও না কেন বাপু? আমি কী করব? আর করলেও খরচা আছে। বাওয়ালির জবাব বলে কথা। পারবে? ঘন্টায় তিন হাজার টাকা। আগাম চাই। মাল দেবে, আমি নেমে পড়ব। ঘন্টা বাড়লে রেট বাড়বে, বলে দিলাম। এমনিতে আমি মিছিলে গেলে দু’হাজার নিই। আর রুদালিতে এক হাজার। কোন্টা চাই?
-- ওই রুদালিটাই করে দেবেন দিদি। এই হাজার দিয়ে যাচ্ছি। নিন্। কালই লাগিয়ে দিন।
অশান্তি করার জন্য শান্তিকে স্বপ্নার পেছনে লাগিয়েও শান্তিতে ঘুমোতে পারলাম না। হাতকাটা স্বপন, ছড়া স্বপন, শ্মশান স্বপন আর স্বপ্না মিলে আমাকে মেরে ফেললো!
মুখে কষ্ট মেখে হাত কাটা স্বপনের দোকানে চা টোস্ট-এর অর্ডার দিয়ে বসে দেখছি কী করে সে এক হাতে চা বানিয়ে ঢাললো, পাউরুটি সেঁকলো, তারপর একে একে টেবিলে রাখলো। আর আমার দুটো হাত, তবু যেন আমিই নুলো। স্বপন বললো –
-- কী ব্রাদার, মুখটা যেন পেছনে কাটি করেছে কেউ?
-- আর বোল না, আমার স্বপ্না বাড়িউলি...
-- হ্যাঁ হ্যাঁ বলো, রগড়টা বলো, বাড়িউলি স্বপ্নার সঙ্গে ফস্টিনস্টি বুঝি?
-- না গো। স্বপ্না আমাকে প্যাঁদাতে বাকি রেখেছে। আমাকে তুলবেই। হপ্তার মধ্যে যদি না উঠি তাহলে শ্মশান স্বপনকে লেলিয়ে দেবে। আচ্ছা তুমিই বোঝ স্বপনদা, শ্মশান স্বপন এলে আমি কোথায় যাই?
-- ভাবতে হচ্ছে। তুমিইইই –- কাঁধে চেপে শ্মশানে চলে যাবে। আরে হ্যাঁ, তুমি ছড়া স্বপনের কাছে চলে যাও। ও এমন ছড়ানো ঝাড়বে না, ভূতেও পালাবে। সেই সেবার...
অগত্যা ছড়া স্বপনকে –- একটা কিছু উপায় করো ভাই, আমাকে রক্ষে করো। কেসটা শুনে স্বপন বললো –- সিরিয়াস। এইজন্যই তো কবি ছীবানন্দ সুসাইড করেচিল। তবে ভয় নেই। আমার কাচে এয়েচো, কিছু একটা হয়ে যাবে। এমন লিখে দুবো না, যে কানে গেলেই লজ্জা দেবে। কিছু মাল ছাড়ো দিকি। হাজার পাঁচেক। ভেবোনি, শ্মশান স্বপন এলে এর ডবল নেবে খন।
-- এখন তো নেই ভাই।
-- তবে আর কী। কাল এসো বাড়িতে। মাল্লু দেবে, কবতে নেবে। ঠিক আচে?
আমার কাঁপুনি আর কমে না। ঝুলে রইলো এখনো। বাড়ি ফিরতে পা সরছে না। কী করে সেই খান্ডারনীকে চুপ করানো যায়, তা ভাবতে ভাবতে মনে পড়লো পাশের বস্তির শান্তির কথা। ভাড়াটে চোপদার, মানে, চোপার লড়াইয়ে ক্ষেপ নেয়, ভাড়া খাটে। দেখি যদি কমে কোনো উপায় হয়! শান্তির ঘরের দরজায় পৌঁছে দেখি কাঁপুনি কিছুতেই থামছে না। মানুষের কত বন্ধু থাকে এসময়ে মনোবল বাড়াবার জন্য। আমার ভাগ্যে না বউ না বন্ধু। এমন কী পাড়ার ক্লাবও স্বপ্নার দলে। দরজার কড়ায় হাত রাখা মাত্র সেটা নিজে থেকেই বাজতে থাকলো।
-- কে রে? মেয়েমানুষের গলা এত বাঁজখাই হতে পারে ভাবা যায় না। আমার পিলে চমকে গেল। দরজা খুলে এসে দাঁড়ালেন মূর্তিমতী।
-- কেএএএ? ওমা! পাড়ায় থাকি, ভাজা মাছটি উলটে খেতে দেখিনি তো! তোমাকে তো কখনো রা কাড়তে দেখিনি গা!। তা আজ কী মনে করে বাছা?
-- আমাকে বাঁচান দিদি। বাড়িউলি বাওয়াল করছে উঠে যাবার জন্য। শ্মশান স্বপন দেখাচ্ছে। মোটে এক হপ্তা টাইম। আমাকে বাঁচান!
-- তো উঠে যাও না কেন বাপু? আমি কী করব? আর করলেও খরচা আছে। বাওয়ালির জবাব বলে কথা। পারবে? ঘন্টায় তিন হাজার টাকা। আগাম চাই। মাল দেবে, আমি নেমে পড়ব। ঘন্টা বাড়লে রেট বাড়বে, বলে দিলাম। এমনিতে আমি মিছিলে গেলে দু’হাজার নিই। আর রুদালিতে এক হাজার। কোন্টা চাই?
-- ওই রুদালিটাই করে দেবেন দিদি। এই হাজার দিয়ে যাচ্ছি। নিন্। কালই লাগিয়ে দিন।
অশান্তি করার জন্য শান্তিকে স্বপ্নার পেছনে লাগিয়েও শান্তিতে ঘুমোতে পারলাম না। হাতকাটা স্বপন, ছড়া স্বপন, শ্মশান স্বপন আর স্বপ্না মিলে আমাকে মেরে ফেললো!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন