![]() |
কালিমাটির ঝুরোগল্প ১৩৫ |
ডুব
ওভারব্রিজে থরে থরে গাড়ি সাজানো। অরিন্দম হঠাৎ পাশের সার্ভিস রোডে ঢুকিয়ে দিল গাড়ি। শর্মিলা পাশের সিটে বসে। যন্ত্রণায় মুখ চোখ ঘর্মাক্ত হয়ে উঠেছে। নাইটি ভিজে গেছে। জল ভেঙে গেছে। আর সময় নেই। এখনই ভর্তি না করলে বাচ্চা আর মা, কারোকেই বাঁচানো যাবে না। অরিন্দমের দেখাদেখি আরও কয়েকটা গাড়ি ঢুকে পড়ল সার্ভিস রোডে। খানিকটা এগিয়ে যেতে যেতে অরিন্দম তার ডাক্তার বন্ধুকে ফোন করল।
-হ্যালো সন্দীপন। শোন না! গ্লোবালে
নিয়ে গেলে ভর্তি নেবে তো?
-নেবে। সব বলা আছে। তুই শুধু আমার
নাম বলিস।
-ওকে। রাস্তায় আছি।
-হ্যাঁ। বেশি দেরী করিস না কিন্তু...
-না না। অন মাই ওয়ে।
বলতে বলতে হঠাৎ ব্রেক কষতে বাধ্য
হল অরিন্দম। সামনে রাস্তা কাটা! একটা বোর্ড লাগানো যেত না? অন্ধকারে বুঝতে না পারলে
কী হতো! শর্মিলা ঝিমিয়ে পড়ছে। অরিন্দম ব্যাক করতে গিয়ে দেখল তার পিছনে থরে থরে গাড়ি সাজানো। তারা তাকে অনুসরণ করে ওই রাস্তায়
ঢুকে পড়েছে। এটা তো সিঙ্গল লেন। তারা না সরলে তার নড়বার জো নেই। ভাবতে ভাবতে অরিন্দম
অনুভব করল, শর্মিলার জঠোরে জলভর্তি অ্যামনিওটিক স্যাকে ঘুরপাক খাচ্ছে বুলটি। হাত নেড়ে
কী বলতে চাইছে। বুদবুদ ভেসে আসছে চারিদিক থেকে। বুলটি যেন বলছে, বাবা, বাবা...
ঘুমটা ভাঙতেই ধড়মড় করে উঠে পড়ল অরিন্দম। শর্মিলা অঘোরে ঘুমোচ্ছে পাশে। সম্প্রতি অপারেশন হয়েছে তার। জরায়ু নাড়ি বাদ পড়েছে। উপায় ছিল না। ডাক্তাররা সবাই একমত ছিল। বাদ দিতেই হবে। এখনও পেটে ব্যথা। অরিন্দমের আর একপাশে গোপলু শুয়ে। নিশুতি অন্ধকারে বিছানার ওপর বসে অরিন্দম ভাবছিল, কেন হঠাৎ এমন স্বপ্ন দেখল সে! তবে কী...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন